আইইএলটিএস (ইংরেজি: IELTS) বা International English Language Testing System হচ্ছে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রাপ্ত একটি পরীক্ষা। যাদের মাতৃভাষা ইংরেজি নয় এই পরীক্ষা মূলত তাদের জন্য। ব্রিটিশ কাউন্সিল, আইডিপিঃ আইইএলটিএস অস্ট্রেলিয়া ও ক্যাম্ব্রিজ ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যাসেসমেন্ট কর্তৃক যৌথভাবে এটি পরিচালিত হয়ে থাকে।
IELTS – ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেম– বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয় ইংরেজী ভাষার পরীক্ষা। ভাষাগত মূল্যায়নে বিশ্বের কিছু অগ্রণী বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষাটি তৈরী করেছেন এবং এতে আপনার ইংরেজী ভাষার সবকটি দক্ষতা- রিডিং, রাইটিং, স্পিকিং ও লিসেনিং মূল্যায়ন করা হয়।
ইংরেজী ভাষাভাষী পরিবেশে আপনি কিভাবে পড়াশোনা, কাজ করা ও বাস করার জন্য ইংরেজীর ব্যবহার করবেন পরীক্ষাটি তারই প্রতিফলন ঘটায়। আপনি বিশ্বজুড়ে যে কোনও অফিসিয়াল টেস্ট সেন্টারে পরীক্ষা দিতে পারেন।
প্রধানত যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য আইইএলটিএস অপরিহার্য ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর আমেরিকা অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও এ পরীক্ষার স্কোর গ্রহণ করছে এবং ইউরোপের বেশির ভাগ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আইইএলটিএস গ্রহণ করে থাকে। এই পরীক্ষায় সবাই অংশ নিতে পারেন, কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। এখানে বয়সেরও কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আপনি যেখানে যেতে চান সেখানেই যেতে পারবেন বেশিরভাগ দেশেই যেখানে ইংরেজীই প্রধান ভাষা, সেখানে আপনাকে চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্সের জন্য আবেদন করতে ইংরেজী ভাষায় দক্ষতার প্রমাণ দেখাতে IELTS কোর্স সম্পন্ন করা থাকলে তা আপনাকে সাহায্য করবে।
দেশে বসেই নিজেকে প্রমাণ করুন IELTS পরীক্ষা দিয়ে আপনার ইংরেজী ভাষার দক্ষতা প্রমাণ করা আপনাকে নিজের দেশেও আরো ভালো চাকরী বা পদোন্নতি পেতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার IELTS পরীক্ষার ফলাফল আপনাকে অভিবাসনের চাহিদাগুলি পূরণ করতেও সাহায্য করবে। ইংরেজী ভাষার পরীক্ষা দিতে হয় এমন সব অভিবাসন কর্তৃপক্ষই IELTS গ্রহন করে।
পরীক্ষাপদ্ধতি
আইইএলটিএস পরীক্ষা দেয়া যায় দুই ধরণের মডিউলে: একাডেমিক AC ও জেনারেল GT ট্রেনিং। স্নাতক, স্নাতকোত্তর অথবা পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য পরীক্ষা দিতে হয় একাডেমিক মডিউলে। যদি কোনো শিক্ষার্থী কারিগরি বিষয় বা প্রশিক্ষণে ভর্তি হতে চান, তবে তাকে জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। এ ছাড়া যারা ইমিগ্রেশনের জন্য যেতে চান, তাদেরকেও জেনারেল ট্রেনিং মডিউলে পরীক্ষা দিতে হয়। আইইএলটিএস পরীক্ষায় দুই ধরনের মডিউলেই শ্রবণ (শোনা), পাঠন (পাঠ করা), লিখন ও কথন (কথা বলা) এই চারটি অংশ থাকে।
লিসেনিং
এ অংশে কথোপকথন শুনে বোঝার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। সিডি থেকে কথোপকথন শুনে এ অংশে প্রশ্নের উত্তর করতে হয় পরীক্ষার্থীদের। ৪০টি প্রশ্ন থাকে। ৩০ মিনিটে চারটি অংশে এ পরীক্ষা নেওয়া হয়। একটি বিষয় কেবল একবারই বাজিয়ে শোনানো হয়।
রাইটিং
ইংরেজি লেখার দক্ষতা যাচাই করা হয় এ অংশে। এখানে ১ ঘণ্টায় দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। দ্বিতীয় প্রশ্নটিতে প্রথম প্রশ্নের চেয়ে বেশি নম্বর থাকে।
রিডিং
পরীক্ষার্থীদের এ অংশে ১ ঘণ্টায় তিনটি অনুচ্ছেদ থেকে মোট ৪০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এখানে বিভিন্ন জার্নাল, বই, সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন থেকে কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়ে থাকে। সেখান থেকেই বাক্য পূরণ, সংক্ষিপ্ত উত্তর, সঠিক উত্তর খুঁজে বের করা ইত্যাদি থাকে।
স্পিকিং
এখানে পরীক্ষার্থীদের মোটামুটি ১১ থেকে ১৪ মিনিটের পরীক্ষা দিতে হয়। প্রথম অংশে পরীক্ষার্থীকে কিছু সাধারণ প্রশ্ন করা হয়, যেমন: পরিবার, পড়াশোনা, কাজ, শখ ইত্যাদি। দ্বিতীয় অংশে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে দুই মিনিট টানা কথা বলতে হয়। এর আগে প্রস্তুতির জন্য এক মিনিট সময় দেওয়া হয়। তৃতীয় অংশে থাকে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে পরীক্ষকের সঙ্গে চার-পাঁচ মিনিটের কথোপকথন।
স্কোরিং
১ থেকে ৯-এর স্কেলে আইইএলটিএসের স্কোরিং করা হয়। চারটি অংশে আলাদাভাবে প্রাপ্ত স্কোর যোগ করে গড় করে চূড়ান্ত স্কোর দেওয়া হয়। এ পরীক্ষায় পাস বা ফেল হওয়ার কোনো বিষয় নেই। আইএলটিএস স্কোরের মেয়াদ থাকে ২ বছর।